“ক্যান্সার ট্রেন”- মানে কি নিউজটি পড়লে আপনি শতভাগ সমৃদ্ধ হবেন।
নিউজ ডেক্সঃ ভারতের পাঞ্জাবের ভাটিন্ডা গ্রামটি একটি কৃষি প্রধান গ্রাম। গ্রামের রেল স্টেশন থেকে প্রতি রাতে একটি ট্রেন ছেড়ে যায়।
এই ট্রেনটি যায় রাজস্থানের বিকানর ক্যান্সার হাসপাতাল পর্যন্ত। ফসলের মাঠ থেকে ক্যান্সার হাসপাতাল পর্যন্ত পৌছে দেয়া এই ট্রেনটির নামই ক্যান্সার ট্রেন। যদিও এটি অফিসিয়াল নাম না।কিন্তু মানুষ তাকে এই নামেই চেনে এই নামেই ডাকে। কারণ ট্রেনটির যাত্রীদের ৫০ ভাগেরও বেশি ক্যান্সার আক্রান্ত রোগি! ট্রেনটির আসল নাম ছিলো আবোহার যোধপুর প্যাসেঞ্জার। কিন্তু সেই নাম জানতে হলে আপনাকে গুগল করে খুজে বের করতে হবে।
ক্যান্সার ট্রেনে যাতায়তরত ক্যান্সার রোগিদের বেশির ভাগই কৃষক! জমিতে ব্যবহারিত রাসায়নিক সার কীটনাশক ইত্যাদির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার আজ তাদের জীবনে এই করুণ পরিনতি বয়ে এনেছে। এইসব কীটনাশক ব্যাবহারকারীরা অধিকাংশই এর ভয়াবহতা সম্পর্কে অজ্ঞ ছিলেন।
কিন্তু এখন অনেকে পেছনে ফেরার পথ না পেয়ে জেনে বুঝেও এই বিষ ব্যবহার করে নিজেকে যেমন ফেলে দিচ্ছেন মৃত্যু ফাঁদে খাদ্য ও পরিবেশেও ঢুকে যাচ্ছে বিষ। যদিও এই কীটনাশক বিক্রি করা কোম্পানিগুলো বলছে এই বিষের কারণেই নাকি কৃষক বেঁচে আছে। ব্যবসার কাছে বাচা মরার সংজ্ঞা কি কে জানে!
ভারতের সবচেয়ে বড় কীটনাশক কম্পানি ইউনাইটেড ফসফরাস লিমিটেড এর মালিক রাজ্জু শ্রভ বলছেন, ‘কৃষকের এই আক্রান্ত হওয়ার পেছনে কীটনাশকের কোন ভূমিকা নেই। মানুষ মিথ্যা বলে। বরং এই কীটনাশক ব্যবহারকারীরা আরো বেশি স্বাস্থ্যবান সফল।
কিন্তু গবেষক, চিকিৎসকরা বলছেন এই আক্রান্ত হওয়ার পেছনে মূল কারন কীটনাশক। এমনকি পাঞ্জাবের কৃষকরাও এটা এখন জেনে গেছে জীবন দিতে দিতে। অধিকা উৎপাদন মুনাফার ফাদে পরে এখন চিকিৎসা ব্যয়ই মেটাতে পারছেন না তারা! আত্মাহত্য করেছেন অসংখ্য কৃষক।
বাংলাদেশে কি অবস্থা? এ দিকে যদি তাকাই, তাহলে গত কয়েক বছর আগের একটি গবেষনা জরিপের তথ্যর দিকে তাকালে কিছুটা ধারনা পাওয়া যাবে। জাতীয় ক্যান্সার গবেষনা ইনিস্টিটিউটের তথ্য মতে ২০১৭ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে সংস্থাটির হাসপাতালে যত পুরুষ রোগী ভর্তি হয়েছেন – তাদের মধ্যে ৬৪ শতাংশই নানা ভাবে কৃষি কাজের সাথে জড়িত। আর নারী-পুরুষ মিলিয়ে যত ক্যান্সার রোগী ভর্তি হয়েছেন – তাদের ৩৪ শতাংশই পেশায় কৃষির সাথে জড়িত। নিশ্চই বুঝা যাচ্ছে এই আক্রান্তের পেছনের প্রধান কারন কি?
দিন দিন জমিতে কীটনাশকের মাত্রা বাড়ছে… কারণ উৎপাদন বাড়াতে হবে। তবে এটা মোটামুটি সচেতন মানুষেরা জেনে গেছে এই পদ্ধতিতে আমাদের খাদ্যের ভেতরও ঢুকে গেছে এই বিষ। যা স্লো পয়জন হিসেবে কাজ করছে এবং আমাদের আক্রান্ত করছে নানা রোগে…।
এই পরিস্থিতিতে যে প্রশ্নটি সামনে এসেছে তা হলো, মানুষের সংখ্যা বাড়ছে জমিও কমছে। অল্প জমিতে অধিক ফসল চাই উৎপাদন চাই। আর এই জন্য রাসায়নিক সার, কীটনাশক ব্যবহার করা ছাড়া আর কি উপায় আছে? আবার অনেকেই প্রশ্নটিও করতে চাননা।
তাদের সোজা সাপ্টা জবাব রাসয়নিক সার, কীটনাশক ছাড়া উপায় নেই। অনেকে বলছেন এটা বন্ধ করলে দূর্ভিক্ষ লাগবে।
যদি আমরা বিকল্প সহজ ও সুন্দর উপায় কি হবে সেইটা নিয়ে আলোচনা তুলতে চাই সেই আলোচনা যদি আপনার প্রচলিত তথাকথিত রাসায়নিক নির্ভর কৃষি বিজ্ঞানের ভাবনা কে ধাক্কা দেয় তাহলে কি আপনি সেই আলোচনায় অংশ নিতে প্রস্তুত! এই আলোচনা জোড়ালো ভাবে শুরু হওয়া উচিত কিনা? নিরাপদ খাদ্যের আলোচনা সামনে আনা উচিত কিনা? কি মনে হয় আপনার…?